বাড়িতে যেদিন বিয়ের আয়োজন করা হলো সেদিন অনুকে তেমন একটা আঁচ করতে দেয়া হলনা যে আজই তার বাপের বাড়িতে বাদরামীয়ার শেষ দিন।কারনটা আর কিছু নয়, যদি এ ভয়ে সে এ গ্রাম ছেড়ে ও গ্রামে চলে যায় তাহলে তো বংশের জাঁত যাবে।রাড়িতে যখন ভীষন রান্নাবানা চলছে তখন অনু এসে মা র কাছে বসল।তারপর আগ্রহ ভরে জিজ্ঞেস করল,বাড়িতে কি এমন আয়োজন চলছে যা তাকে বলা হচ্ছেনা।এরই মাঝে এক দুড়ন্ত বালক হাওয়ার বেগে এসে বললো,"চল অনু পাখি ধরতে যাই" অনু উঠতে উদ্যত হলে মা বাঁধা দিয়ে বললেন,"আজ আর নয় মা" আজকে তোমার বিয়ে।কথাটি শুনে ও হাসিতে উচ্ছ্বল হয়ে উঠে। "সে আবার কি গো মা" "সে পরে বলব, আমার কাছেই বসে থাক মা।এভাবে সারাটা দিন ছটফট করে কাটে অনুর।এরই মাঝ যতোটুকু ফাঁকা সময় পেয়েছিল, তখন ওর চোখে ভাসতে থাকে সেই তাল গাছ, নির্জন বন, কর্দমাক্ত বিল,আর শীর্ণ নদীখানির কথা।বেলা যখন গেড়িয়ে এল তখন ওর ভাবনার জালও ছিন্ন হল।গ্রাম থেকে পড়শীরা এসে তাকে সাঁজাতে থাকে।নাকফুল, হাতের বালা, কানের দুল, নীল পেড়ে শাড়ি, পায়ে আলতা আরো কত কি পরিয়ে অনুকে প্রকৃতপহ্মেই বধু করা হল। অপেহ্মা আর তেমন দীর্ঘ হলোনা।সন্ধ্যা ঘনাতেই বর পহ্ম এসে মোল্লা দিয়ে কবুল করিয়ে অনুকে আজগরের বউ করে নিয়ে গেল। আজগর মেট্রিক পাশ করা ছেলে।দেখতে শুনতেও খুব ভাল।তবে অনুর বয়সের সাথে আজগরের বয়সের অনেক ব্যবধান ছিল।তারপরও এখানে বিয়ে দেয়ার একমাত্র কারন হলো পাত্রের অগাদ সম্পদ। অনুর বাবা, মা ভেবেছিল "তাতে কন্যা সুখীই হবে" তার চেয়ে আশ্চর্য কথা হল শ্বশুরালয়ে যাবার সময় অনু একটুও কাদলনা।।তবে মা ভীষন কাঁদলেন আর বিধাতার কাছে বললেন"মেয়েকে আমার সুখে রেখ খোদা। খোশ গল্প করতে করতে অনু নিজের ঘরে মানে শ্বশুরালয়ে চলে এলো।তার চোখে মুখে মাতৃগৃহ বিয়োগ কিছুই ছিলনা।বরং কিছুদিনের জন্য বাবার বাড়ি ছেড়ে আসতে পেরে ওর ভালই লাগল।কিন্তু এখন থেকে যে তার ইচ্ছা আর ইচ্ছা নেই তা বুঝল না।পরের দিন সকাল হতেই শ্বাশুরি ঢেকে উঠায় অনুকে। পাড়াপড়শীরা দেখতে এসেছে অনুকে। দেখে সবাই বলল, সুন্দর বটে, তবে অনেক চঞ্চল। চলবে---------
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন